• E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন

×

খুলনার তিন উপজেলায় নিরুত্তাপ ভোট -ফুলতলার তিন কেন্দ্রে ব্যালট বই ছিনিয়ে গণসিল

  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪
  • ৫৩ পড়েছেন

দেশ প্রতিবেদক :
খুলনার ফুলতলা উপজেলার তিনটি ভোট কেন্দ্রে ব্যালট বই ছিনিয়ে নিয়ে গণসিল মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ওই ভোটগুলো বাতিল করেন। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এ টি এম শামীম মাহমুদ বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এছাড়া খুলনার তিনটি উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে মঙ্গলবার খুলনার ফুলতলা, দিঘলিয়া ও তেরখাদা উপজেলায় নিরূত্তাপ ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যাই ছিল বেশি। কোনো কেন্দ্রেই ভোটারের লম্বা লাইন চোখে পড়েনি। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ফুলতলা উপজেলার শিরোমনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে (পশ্চিম পাশের ২ তলা ভবন) একজন মহিলা একটি বুথে প্রবেশ করে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের কাছ থেকে ব্যালট বই ছিনিয়ে নেন। তিনি ৩৩টি ব্যালট পেপারে সিল মারেন। পরে আইন শৃংখলা বাহিনী তাকে আটক করে। ফুলতলা উপজেলার আনন্দ নিকেতন মডেল স্কুল ভোটকেন্দ্রে একটি কক্ষে কয়েকজন যুবক ১৯টি ব্যালট পেপারে সিল মারে। যার মধ্যে ৫টি ব্যালট বক্সে ঢুকিয়ে দেয় এবং ১৪টি ব্যালট বক্সে ঢুকাতে পারেনি। একই ঘটনা ঘটেছে শিরোমণি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পশ্চিম পাশের ২ তলা ভবন কেন্দ্রে। কয়েকজন যুবক ভোট কক্ষে প্রবেশ করে ব্যালট বই ছিনিয়ে নেয়। তারা ৫১টি ব্যালট পেপারে সিল মারে। যার মধ্যে ১০টি ব্যালট বক্সে ঢুকিয়ে দেয় এবং ৪১টি ব্যালট বাইরে পড়ে ছিল। অন্য একটি কক্ষে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী ৫৭টি ব্যালট পেপারে সিল মারে যার যার ১টিও ব্যালট বাক্সে ঢুকাতে পারে নাই। রিটার্নিং কর্মকর্তা এ টি এম শামীম মাহমুদ বলেন, শিরোমনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সিল মারা ৩৩টি ব্যালট পেপারের একটি বাক্সে ঢোকানো হয়নি। অন্যান্য ভোট কেন্দ্রেও গণসিল মারা ব্যালটগুলো প্রিজাইডিং অফিসাররা বাতিল করেছেন। যে ব্যালটগুলো বাক্সে ঢোকানো হয়েছিল, সেগুলোর পেছনে সিল ছিল না। গণনার সময় সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, অন্য সব কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কোন প্রার্থীর সমর্থকরা ব্যালট পেপার কেড়ে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত তা তিনি জানাতে পারেননি। ভোটার উপস্থিতি কম ঃ বেলা ১২টায় ফুলতলা উপজেলার আলকা পল্লী মঙ্গল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি খুবই কম। এ স্কুলের পুরুষ ভোটকেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৪৫৬ ভোট। সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টায় ভোট পড়েছে মাত্র ৪২০টি। ভোট পড়ার হার ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ। অপরদিকে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ২ হাজার ৬৭৬টি। একই সময়ে এ কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৩৯২টি। এ কেন্দ্রের ভোট পড়ার হার ১৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অপরদিকে দিঘলিয়া উপজেলার ব্র²গাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ভোটারের উপস্থিতি কিছুটা থাকলেও পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার শেখ মো. ফরহাদ হোসেন জানান, ব্র²গাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৩২৯ জন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত চার ঘন্টায় ভোট পড়েছে ১ হাজার ৯৯টি। চার ঘণ্টায় ভোট পড়ার হার ৩৩ শতাংশ। এ উপজেলার হাজীগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১২টা পর্যন্ত ৩ হাজার ১৫২জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে মাত্র ৯৩২টি। ভোট পড়ার হার ২৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসরার হরিপদ বৈরাগী বলেন, সকালের দিকে ভোটারের চাপ কিছুটা ছিল। বিকালের দিকে আবার বাড়তে পারে। দুপুর পৌঁনে ১টায় তেরখাদা উপজেলার লস্করপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রের মাঠ প্রায় ফাঁকা। বুথগুলোতে ভোটারের চাপ নেই। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা নির্বিঘেœ দায়িত্ব পালন করছেন। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসরার প্রজিৎ সরকার জানান, এ ভোট কেন্দ্রের ভোটারের সংখ্যা ২ হাজার ৪৪৭ জন। বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৫৯৬টি। ভোট পড়ার হার ২৫ শতাংশ। এরপর দুপুর ৩টায় পানতিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ভোট কেন্দ্রের সামনের রাস্তায় বেঞ্চ পেতে বসে আছেন। আনসার সদস্যদেরও কোনো ব্যস্ততা নেই। কেন্দ্রের বুথে ঢুকে দেখা যায়, ভোটার না থাকার কারণে প্রার্থীদের এজেন্টরা গল্প করছেন। তারা বলেন, ভোটার নেই। তাই বসে আছি। এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সুব্রত হালদার জানান, পানতিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৪৪৯জন। দুপুর ৩টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭১২টি। ভোট পড়ার হার ৪৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। রিটার্নিং কর্মকর্তা এ টি এম শামীম মাহমুদ জানান, খুলনার ফুলতলা, দিঘলিয়া ও তেরখাদা উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট গ্রহণকালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA